স্বপ্নে মৃত ব্যক্তিকে দেখলে কি করনীয়? - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)


হাজ্জাজ বিন ইউসুফকে ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহ.) স্বপ্নে দেখলেন, সে জাহান্নামে আছে। তার পেট ফেটে পাকস্থলী বের হয়ে গিয়েছে, সে গাধার মতো গোল গোল ঘুরছে। ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহ.) জিজ্ঞাসা করলেন, "কি অবস্থা?"

হাজ্জাজ বিন ইউসুফ উত্তর দিল, "শুধু ঈমানের আশায় পড়ে আছি, কখনোতো আল্লাহ জান্নাতে দাখিল করে দিবেন।"

যদি ঈমানের সাথে মৃত্যু হয়, কিন্তু নেক আমল না থাকে তাহলে আল্লাহর কানুন হচ্ছে জাহান্নাম। মৃত ব্যক্তিকে যদি স্বপ্নে দেখেন, তাহলে সেটি সত্যি হয়। আমার একজন কাজিন। যেমন জমিদারের সন্তানেরা হয়, পুরো জীবন গাফিলতির মধ্যে কাটিয়ে দিয়েছে। যুবক বয়সে মারা গিয়েছে। সে সেই নামাজগুলো পড়েছে, যে নামাজগুলো আমি তাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছি অথবা দুই ঈদের নামাজ। এছাড়া আমি তাকে কখনো নামাজ পড়তে দেখি নাই। আমি তাকে স্বপ্নে দেখলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "কি অবস্থা?"

সে বলল, "আগুনের মধ্যে আছি।"

তার সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক, সে আমার কাজিন। তার জন্য বদলী হজে গেলাম। হজ থেকে আসার পর, আমি তাকে স্বপ্নে দেখি নাই। অন্য একজন তাকে স্বপ্নে দেখল, সে তাকে বলল, "তারিক মিয়াকে বল, তার উপহার আমি পেয়ে গিয়েছি।"

আল্লাহ এই পথও রেখে দিয়েছেন যে, মৃত ব্যক্তির জন্যে ইছালে সওয়াব করলে তার নাজাতের জড়িয়ে হয়ে যায়। যদি ঈমান থাকে আমল না থাকে, তাহলে সে সরাসরি জান্নাতে যাবে না। সমগ্র দুনিয়া অসফলতার সমুদ্র। আমি এই শব্দের অর্থ যাবুতীর মধ্যে গিয়ে বুঝেছি। যখন আমাদের সফল হয়েছিল নৌকার মাধ্যমে। আমরা যে নৌকার মধ্যে বসেছিলাম সেই নৌকাটি নতুন ছিল এবং অন্যেরা যে নৌকা মধ্যে বসেছিল সেই নৌকাটি পুরনো ছিল। সেই স্টিমারটিতে ২৫০ থেকে ৩০০মানুষ ছিল প্রায়। আমাদের নৌকায় ২৫ থেকে ৩০ জন ছিল। সেই স্টিমারটি ওভারলোডের কারনে ডুবে গেল। নাকি অন্য কোন কারণে ডুবে গেছে গিয়েছে সেটা আল্লাহই ভাল জানেন। সেখানে প্রায় দেড়শ মানুষ ডুবে শহীদ হয়ে গিয়েছে। আমাদের নৌকাটির তাদের আগে ছিল কিন্তু পিছনে কি হয়েছে তা দেখতে পারি নাই। কিন্তু আমরা খবর পেয়ে গিয়েছি যে, নৌকাটি ডুবে গিয়েছে। এটা শোনার পর আমার মুখ থেকে বের হলো, "কেউ বেঁচে আছে?"

কারণ আমরাতো একসঙ্গেই সফর শুরু করেছিলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "কেউ বেঁচে আছে?

উত্তর আসলো, "জানিনা।"

সমগ্র পৃথিবীর নর-নারী অসফলতার মধ্যে ডুবে গিয়েছে। ভয়ে ভয়ে একটি প্রশ্ন করা হল, "ইয়া আল্লাহ কেউ বেঁচে আছে?"

আল্লাহর উত্তর দিলেন, "না, সামান্য বেঁচে গিয়েছে।"

সবাই এসে গিয়েছে?

হ্যাঁ, শুধু তারেক জামিল আসে নাই। ইল্লা শব্দের অর্থ উর্দুতে শুধু। সবাই এসে পড়েছে শুধু দুই-তিনজন আসে নাই। সমগ্র পৃথিবীর মানুষ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, শুধু কিছু বেঁচে গিয়েছে। কারা বেঁচে গিয়েছে। এই চারটি কাজ যারা করেছে তারা বেঁচে গিয়েছে। এই শর্ত আরোপ করা দ্বারা, সমগ্র কাফের অসফলতার মধ্যে চলে গিয়েছে। নেক আমলের শর্ত দ্বারা, ঈমানদাররা অসফলতার মধ্যে চলে গিয়েছে। এইযে তাবলীগের কাজ হচ্ছে, আল্লাহর ফজল করমে আমি কয়েকবার সমগ্র বিশ্ব সফর করেছি। আমাদেরকে আল্লাহ এই সম্মান দিয়েছেন, এখান থেকে কাফেলা তৈরি হয়ে সমগ্র বিশ্বে আল্লাহর বার্তা পৌঁছাচ্ছে। আমি জঙ্গলের মধ্যে গিয়েছি, সেখানেও তাবলীগের কাজ হচ্ছে। ইউরোপের বরফের পাহাড়ের মধ্যেও তাবলীগের কাজ হতে দেখেছি। তৃতীয় শর্ত আরোপ করা দ্বারা, আমলদাররাও বের হয়ে গিয়েছে। ধৈর্যের শর্ত আরোপ করা দ্বারা, তাবলীগ ওয়ালারাও বের হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেক জায়গায় অসফলতার কিছু কিছু পার্থক্য রয়েছে। ঈমান না আনলে অসফলতা হচ্ছে, কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না। জাহান্নামীরা ফেরেশতাদের বলবে, "আজাব সামান্য কম করে দাও।"

ফেরেশতারা জিজ্ঞাসা করবে, "কেউ দাওয়াত নিয়ে এসেছিল?"

জাহান্নামীরা বলবে, "হ্যাঁ।"

এখন তোমাদের দোয়া, কোন প্রতিদান দেওয়া হবে না।


No comments

Powered by Blogger.