ফেরাউনের পাশবিক নির্যাতন! - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)


ফেরাউনের একজন খদেমা ছিল, মুসলমান হয়ে গিয়েছিল। মহিলারা দুর্বল হয়, আর যদি তারা খাদেম হয় তাহলে আরো দুর্বল হয়। ঈমান লুকানো যায় না। কালেমা তার অন্তরের মধ্যে ছিল তা প্রকাশ হয়ে গেল।সুগন্ধ কিভাবে লুকানো যায়?
সুগন্ধ কিভাবে লুকায়?
তার ঈমানের কথা সবাই জেনে গেল। ফেরাউন তাকে গ্রেফতার করে ফেললো।তার দুই মেয়ে ছিল। এক মেয়ে দুধ খাওয়া বাচ্চা, আরেক মেয়ে সবেমাত্র হাঁটাতে শিখেছে। ফেরাউন বড় একটি কড়াই এর মধ্যে তেনে নিল।সেই তেল আগুনের উপরে রাখলো।আগুনের উপর রাখার পর তেল ফুটা আরম্ভ করলো।অতঃপর সে তার দরবারে সবাইকে জড়ো করলো।সে তার বান্দি ও তার দুই মেয়েকে নিয়ে আসলো সেখানে।মায়েরা শুনছেন আমার বক্তব্য, আমরা জানি মায়েরা সন্তানের জন্য কিনা করতে পারে। মায়ের মমতা দিয়ে ইতিহাস ভরে আছে।আল্লাহ তার বান্দার প্রতি ভালোবাসার জন্য, পিতার ভালোবাসা দ্বারা উদাহরন দেয় নাই।আল্লাহ বলেছেন, "আমি আমার বান্দাকে মায়ের থেকে সত্তর গুণ বেশি ভালোবাসি।"
ফেরাউন বলল, "তুই যদি মুসার (আ.) দ্বীনের ওপর ঈমান আনিস, তাহলে তোর দুই মেয়েসহ এই তেলের মধ্যে তোদেরকে জ্বালিয়ে দিব।"
হ্যাঁ, মানুষ ভাবে মৃত্যু অনেক বড় শাস্তি।যে আল্লাহকে পেয়ে গিয়েছে, তার জন্য মৃত্যু পুরষ্কার।এ দুনিয়ার দুঃখ থেকে নাজাত পেয়ে গিয়েছে।আখিরাতে নিয়ামতের হকদার হয়ে গেল। ফেরাউন বান্ধি তাকে বলল, "আমার তো দুই মেয়ে আছে, যদি আমার ১০০ হতো তাহলে আমি ১০০ মেয়েকেও আল্লাহর নামে কুরবান করে দিতাম। যা করার তুমি তা করো।"
ফেরাউন তার বড় মেয়েকে ধরে যখন গরম তেলের উপর ফেলতে নিল তখন মেয়েটি বলল, "আম্মা।"
হ্যাঁ, সেই মাকে জিজ্ঞেস করো, যার মেয়েকে গরম তেলে ফেলা হচ্ছে আর তার একটি স্বীকারোক্তি দ্বারা তার মেয়ের জান বেঁচে যায়। সে কালেমায়ে কুফর পড়ে নিতো, বাসায় গিয়ে তওবা করে নিতো। আমি কোরবান যাই! ঈমানের এমন এক পর্যায়ে এসে পড়ে, যখন কোরবান হওয়া বেশি মাহবুব হয়ে পড়ে, যান বাঁচানো থেকে। মেয়ে বলল, "আম্মা।"
মা বলল, "মেয়ে আল্লাহর নামে কোরবান হয়ে যাও, ধৈর্য ধরো।"
হ্যাঁ, ভালোবাসার আগুন এভাবেই প্রসারিত হয়। যে ঈমানদাররা ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা এখনো আমাদের জন্য উদাহরণ। যাদের অনুসরণের মাধ্যমে, পথ হারা রা পথে ফিরে পাচ্ছে। বড় মেয়েকে পা ধরে গরম ফুটন্ত তেলে ফেলে দিলো, ফেলার সাথে সাথে মেয়েটি মাছের মত ভাজা হয়ে গেল। মা তো মাই, মায়ের হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল। মা তো মাই, মায়ের হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল। কিন্তু চোখ থেকে এক ফোঁটা পানিও বের হয় নাই। ধৈর্য শিখতে হলে তার থেকে শেখা। ধৈর্য বই পড়ে শেখা যায় না। চোখ থেকে এক ফোঁটা পানিও বের হয় নাই। আল্লাহ মায়ের চোখের পর্দা সরিয়ে দিল। মেয়ে রুহ বের হতে সে দেখল। মেয়েটা তাকে বলল, "আম্মা ধৈর্য ধারণ করো, এখনি জান্নাতে আমরা একত্রিত হয়ে যাব।"
অতঃপর তার ছোট মেয়েকে ধরে ফুটন্ত গরম তেলের মধ্যে ফেলে দিল।ছোট মেয়েটি বুঝতেও পারল না যে, তার সাথে কি হচ্ছে? 
সেও জ্বলে কয়লা হয়ে গেল। মা এই বাচ্চার রুহ বের হতে দেখল।বাচ্চাটি বলল, "আম্মা ধৈর্য ধারণ কর, এখনই একত্রিত হয়ে যাব।"
যখন তাকে ধরে ফুটন্ত গরম পানিতে ফেলার জন্য ধরল, তখন সে ফেরাউনকে বলল, "ফেরাউন তুমি আমার একটি ইচ্ছে পূরণ করবে?"
ফেরাউন জিজ্ঞাসা করল, "কি?"
সে বলল, "যখন আমাকে জ্বালিয়ে দিবে তখন আমার এবং আমার মেয়ের হাড্ডিগুলোকে কোথাও না ফেলে একত্রিত কোথাও দাফন করে দিও।"
ফেরাউন বলল, "আচ্ছা তোমার ইচ্ছে পূরণ করা হবে।"
হ্যাঁ, দুনিয়ার মধ্যে আল্লাহ ফেরাউনদের ছাড় দেন, কিন্তু ফেরাউনদের ধ্বংস করেও দেখিয়েছেন। নমরুদের ছাড় দেন, কিন্তু নমরুদের ধ্বংস করেও দেখিয়েছেন। কারুনদের ছাড় দিয়েছেন, কিন্তু কারুনদের ধ্বংস করেও দেখিয়েছেন। জান্নাত ও জাহান্নামে নিজাম বানিয়েছেন। অতঃপর একদিন আমাকেও জবাবদিহিতার জন্য দ্বারা করাবে, তোমাকেও জবাবদিহিতার জন্য দ্বারা করাবে। অতঃপর একদলকে জান্নাত দান করা হবে, আরেকদলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। যখন মা মেয়ে জ্বলে গেল, তাদের হাড্ডিগুলো উঠিয়ে এক জায়গায় দাফন করে দিল।দুই হাজার বছর অতিবাহিত হয়ে গেল। নবীজি (স.) মুসা (আ.)-এর ২০০০ বছর পর, দুনিয়াতে তাসরিফ নিয়েছিলেন। নবীজি (স.) যখন বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে মিরাজের জন্য গেলেন।তখন তিনি জমিন থেকে জান্নাতের সুগন্ধ পেলেন।নবীজি (স.) জিব্রাইলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করলেন, "আমি জান্নাতের সুগন্ধ পাচ্ছি, এটি কোথা থেকে আসছে?"
ফেরাউনের বান্ধি ও তার মেয়ের হাড্ডিগুলো এখানে দাফন করা আছে।এটি সময় থেকে এখান সুগন্ধ ছড়াচ্ছে, একটি কেয়ামত পর্যন্ত সুগন্ধ ছড়াতে থাকবে।এখানে এসে দা ফোন আছে, যে কিনা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করেছে।আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে নিন।এই সন্তুষ্ট হোসেন (রাযি.) করেছে।ইয়াজিদ অত্যাচার করেছে, রক্তপাত করেছে।জালিম কখনো সুখী হয় না।আল্লাহ জালিমকে ছাড় ঠিকই দেন।কিন্তু একদিন ঠিকই আসবে যখন আল্লাহ জান্নাতকে সাজাবেন, জাহান্নামের আগুনকে প্রসারিত করবেন।ন্যায় বিচার কায়েম করবেন, পুলসিরাতকে কায়েম করবেন, নিজেরা আরশকে কায়েম করবেন, নিজের ফেরেশতাদের ডাকবেন।অতঃপর তারেক জামিলকে কবর থেকে উঠাবেন উঠিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন, "আমি তোমাকে দুনিয়াতে সম্মান দিয়েছি, সম্পদ দিয়েছি।বল আমার জন্য কি করে নিয়ে এসেছো?
পারবে আল্লাহর কেয়ামতকে থামাতে?
পারবে জাহান্নামকে পানি দ্বারা নিভিয়ে দিতে?
পারবে জান্নাতকে আগুন লাগিয়ে দিতে?
পারবে মৃত্যুকে আটকাতে?
পারবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে?

No comments

Powered by Blogger.