শবে কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ? - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)


আমাদের এখানে মানুষ শুধু ২৭ রমজানে শবে কদরের ইবাদত করে।২৭ রমজানে রাত্রিতে ইবাদত করা কোন দোষের কিছু নয়।কিন্তু নবীজি (স.) বলেছেন, "শবে কদর ৫ রাত্রির মধ্যে ঘুরে ঘুরে আসে।"
কখনো একুশের রাত্রিতে হয়, কখনো তেইশের রাত্রিতে হয়, কখনো পঁচিশের রাত্রিতে হয়, কখনো সাতাশের রাত্রিতে হয়, কখনো ঊনত্রিশের রাত্রিতে হয়।এই ৫ রাত্রের মধ্যে ঘুরে ঘুরে আসে।আপনি ৫ রাত্রি ইবাদত করলে শবে কদর পেয়ে যাবেন।শবে কদরের পিছনের ইতিহাস কি?
নবীজি বলেছেন, "বনী-ইসরাঈলের চারজন আম্বিয়া বা চারজন মুজাহিদ ৮০ বছর জিহাদ করেছে।"
সাহাবীরা বলল, "ইয়া রাসুলল্লাহ! আমাদেরও তো বয়সই 80 বছর হয় না।আমরা তাদের সমকক্ষ কিভাবে হব?"
নবীজি (স.) এখনো তাদের এই প্রশ্নের উত্তর দেন নাই।মজলিস এখনো কায়েম রয়েছে।এই সময়ে জিব্রাইল (আ.) এসে বললেন, "আপনি তাদের সুসংবাদ দিন।আল্লাহ বলছেন…"
আমি আপনার উম্মতকে একটি রাত দিচ্ছি, সেই রাত্রে ইবাদত করলে ৮০ বছরের থেকে বেশি নেকী লেখা হবে।৮০ বছরের নেকির কথা বলেননি, বলেছেন তার থেকে বেশি।যারা আমার ওয়াজ শুনছেন মিডিয়ার মাধ্যমে, তারা এই 5 রাতের ইবাদত ভুলেও ছাড়বেন না।ছোট ছোট রাত, তারাবী শেষ করলে ৩-৪ ঘন্টা রাত বাকি থাকে।কিছু নামাজ পড়ুন, কিছু দোয়া করুন, কিছু কুরআন পড়ুন, কিছু জিকির করুন।মানুষকে ক্ষমা করুন।ক্ষমা করোও অনেক বড় আমল।না হলে আমল আটকে যাবে।ক্ষমা করুন।একজন সাহাবী রাত্রে তাহাজ্জুদের সময় চিন্তা করলো নবীজি বলেছেন সদকা করার জন্য।আমার কাছে তো সদকা করার মতো কোনো অর্থ নেই তাহলে আমি কিভাবে সদকা করব?
তখন তিনি বললেন, "আমার মাওলা! যারা আমাকে অপমান করেছে আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম।আমার এই সদকা কবুল করে নিন।"
ফজরের নামাজের জন্য গেলে।ফজরের নামাজের পর নবীজি (স.) এলান করলেন, "রাত্রে সদকা কে করেছে?"
কেউ উত্তর দিলেন না।তখন নবীজি (স.) আবার বললেন, "রাত্রে সম্মানের সদকা কে করেছে?"
সেই ব্যক্তিটি দাঁড়িয়ে বলল, "ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনার কথা শুনে আমার মনে ইচ্ছা জাগলো সদকা করার জন্য।কিন্তু কোন সম্পদ ছিল না, তাই আমি ভাবলাম আমি আমার সম্মানের সদকা করে দেই।"
নবীজি (স.) বললেন, "তোমার সদকা কবুল হয়ে গিয়েছে।"
শবে কদরের মধ্যে ক্ষমা করুন।মনের মধ্যে কারো ক্ষতি করার ইচ্ছে থাকলে তাহলে আমল আটকে যাবে।শবে কদরের রাত্রিতেও চার শ্রেণীর লোকদের ক্ষমা করা হয় না।আল্লাহ না করুক আমাদের মধ্যে থেকে কেউ এমন ব্যক্তি থাকুক।যদি কেউ থাকে তাহলে তওবা করে নিন।শবে কদরে জিবরাইল (আ.) নামেন, ফেরেশতারা নামে।নেমে পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।আর যারা দোয়া করছে নামাজ পরছে তাদের সাথে আমিন বলে।আর যখন আজান হয়ে যায় তখন সকল ফেরেশতা একত্রিত হয়।জিবরাঈলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করে, "কি হয়েছে?"
জিব্রাইল বলে, "আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, ৪ শ্রেণি ব্যতীত।"
এরা যতক্ষণ পর্যন্ত এই কাজগুলো করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে ক্ষমা করা হবে না।"জি কে কে?"
মদ্যপানকারী, তাকে ক্ষমা করা হয় না শবে কদরে।আল্লাহ না করুন কেমন আছেন, যদি থাকেন তওবা করে নেন।যে সকল ইচ্ছে আপনি আপনার মনে পোষণ করেন, আল্লাহ সেই সকল ইচ্ছেকে হালাল ভাবে জান্নাতের মধ্যে আপনাকে দিবে।আল্লাহ বলেন তুমি এই মদ্যপান ছাড়ো, তোমার মুখের থেকে দুর্গন্ধ আসছে, পেশাব বের হচ্ছে।তোমার রব তোমাকে জান্নাতের মধ্যে তার নিজের কুদরতি হাত দ্বারা পান করাবেন।পিতা-মাতার অবাধ্যকে শবে কদরের মধ্যেও ক্ষমা করা হবে না।আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক ছিন্নকারীকে শবে কদরের রাত্রেও ক্ষমা করা হবে না।চতুর্থ হচ্ছে মনের মধ্যে কিনা পালনকারী।কিনা কাকে বলে?
ভুগাজ কি?
ভুগাজ হচ্ছে, আমি তাকে পছন্দ করিনা।কিনা হচ্ছে, আমি তাকে ক্ষতি করতে চাই।

No comments

Powered by Blogger.