স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা কিভাবে বৃদ্ধি পাবে? - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)


যদি কোন ব্যক্তির স্ত্রী রাগান্বিত হয়, কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া!
যেমনঃ বর্তমানে অযৌক্তিক কারণে রাগান্বিত হয়।যদি স্বামীকে অযৌক্তিক কারণে রাগান্বিত করে স্ত্রী রাত অতিবাহিত করে তাহলে, সম্পূর্ণ রাত নিয়ে তার ওপর আল্লাহর লানত বস বর্ষণ হয়।সম্পর্কের মধ্যে ব্যালেন্স করে দিয়েছেন।হ্যাঁ, পুরুষকে বেশি দোষী সাব্যস্ত করেছে।কেননা কারো মেয়েকে নিয়ে যাওয়া, কোন ছোট দায়িত্ব নয়।ভালো ঘরের মেয়েদের যে বাড়িতে বিয়ে হয়, সেই বাড়ি থেকেই জানাযার জন্য তার লাশ বেষ হয়।তালাক আমাদের এখানে অভিশাপ।সংসার করতে পারছেনা কিন্তু জোরপূর্বক তাকে সংসার করানো হচ্ছে।এমন পরিস্থিতির জন্য আল্লাহ তালাকের বিধান রেখেছেন।আমি গ্রামে ছিলাম, এক মেয় রাত্রি বেলায় তার সন্তানকে নিয়ে আমার কাছে আসলো।আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "কোথা থেকে এসেছো?"
সে উত্তর দিল, "আমি এক জায়গা থেকে এসেছি।"
জায়গার নাম বলছি না।আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, "কেন এসেছ?"
সে উত্তর দিল, "আমাকে আমার স্বামী থেকে বাঁচান, তালাক করিয়ে দিন তার কাছথেকে।"
আমি বললাম, "তোমার মা-বাবাকে বল, আমাকে কেন বলছো?"
সে বলল, "মা-বাবা বলেছে আমি তালাক নিলে, কতল করে ফেলবে।আমার স্বামী আমাকে প্রতিদিন মারে, এমন কোনো দিন নেই যে আমাকে মারে না।আল্লাহর ওয়াস্তে আমার জান বাঁচান।"
আমি বললাম, "আমি কি করতে পারব?
শুধু কান্না করা এবং সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া।আমি তোমাদের পারিবারিক বিষয় কিভাবে হস্তক্ষেপ করব?
হ্যাঁ যদি তোমার আমার কোন আত্মীয়তা থাকতো তাহলে আমি হস্তক্ষেপ  দিতে পারতাম।"
সে বলল, "ভাইয়ের সাথে কথা বলার জন্য।"
আমি ওর ভাইয়ের সাথে কথা বললাম।তার ভাইকে বললাম, "তোমার বোনের খেয়াল রেখো।"
এটি আমাদের সমাজে হৃদয়বিদারক সমস্যা, যা আমাদের সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।কথা কিভাবে বলতে হবে সেটি জানি না।ব্যবসায়িক লেনদেন জানি কিন্তু স্ত্রীর সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে, ছেলের সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে সেটি জানিনা।আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, বর্তমানে সন্তানরা অবাধ্য কিন্তু অবাধ্য হওয়ার পিছনেও মা-বাবার দোষ রয়েছে।সন্তানকে গরু-ছাগলের মতো মনে করে।কিছুদিন পূর্বে এক মেয়ে আমার বাসায় এসে আমাকে বলল, "আমাশ পিতা-মাতা আমাকে যে ছেলের সাথে বিবাহ করাতে চায়, আমি সেই ছেলের সাথে বিবাহ করতে চাই না।আমার পিতা বলে বিয়ে করলে সেই ছেলের সাথে বিয়ে করতে হবে।না হলে তোমার আমার কোন সম্পর্ক নেই।কারণ হচ্ছে, সেই ছেলের সাথে আমার বয়সের পার্থক্য ২০-২৫ বছরের মত।"
এটি অভিভাবকের অত্যাচার সন্তানের প্রতি।হুজুর (স.) আমাদেরকে একটি সুন্দর জীবন ব্যবস্থা শিখিয়েছেন।এবং সেই জীবন ব্যবস্থাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে দেখিয়েছেন।সেই জীবন ব্যবস্থা যে, ব্যক্তি অনুসরণ করবে তার জীবন সুখময় হবে।এর জন্য একটি কাজ করতে হবে, তা হচ্ছে একে অপরকে সহ্য করা।স্বামী স্ত্রীকে গোলাম মনে করে।স্ত্রী বলে পরিবার, সে নিয়ন্ত্রণ করবে পরিবার।স্বামীর মার কোন নিয়ন্ত্রণের অধিকার নেই।এর দ্বারা সম্পর্কে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়।সহ্য করার মাধ্যমে পরিবার পরিচালনা করতে হয়, জোরজবস্তি মাধ্যমে পরিবার পরিচালনা করা যায় না।সম্পর্ক সুন্দর রাখার জন্য অবনত অবনত হতে হয়, সহ্য করতে হয়।যে ব্যক্তি এই আমল গুলো করতে পারবে, আল্লাহর কসম তার জীবন সুখময় হয়ে যাবে।জীবন সুখময় করার জন্য, সুদর্শন চেহারার প্রয়োজন নেই, স্বর্ণ রুপোর গহনা প্রয়োজন নেই।উত্তম আখলাক জীবনকে সুখময় করে দেয়, খারাপ চরিত্র মানুষের জীবনে অশান্তি নিয়ে আসে।একটি হাদিস মনে পড়েছে।নবীজির (স.) কথা সাহাবীরা বুঝতে না পেরে, নবীজীকে (স.) জিজ্ঞাসা করলেন, "ইয়া রাসুলুল্লাহ! দামিন খাদরা কি?"
নবীজি (স.) উওরে বললেন, "খারাপ চরিত্রের সুদর্শন মহিলা থেকে বিরত থাকো।"
তার সৌন্দর্যের ওপর তাকে বিচার করো না।খারাপ চরিত্রের অধিকারী হবেন না।মানুষ ক্ষুধার্ত অবস্থায় জীবনযাপন করতে পারে,  মানুষের খারাপ ব্যবহার, কটুক্তি সহ্য করে জীবন যাপন করতে পারে না।পারিবারিক জীবন সুখময় করার জন্য, একে অপরকে সম্মান করুন।নবীজির সম্মান কিভাবে করতে হয়, তা আমাদেরকে শিখিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.