আল্লাহ রাগান্বিত হলে কি করেন? - মাওলানা তারিক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)
মুসা (আ.) প্রশ্ন করলেন, "ইয়া আল্লাহ! যখন আপনি রাগান্বিত থাকেন, আমরা কিভাবে বুঝব?"
আল্লাহ'তায়ালা বলেন, "যখন আমি রাগান্বিত হই, ক্ষমতা বোকাদের দেই, টাকা কৃপনদের দেই(যারা শুধু গণনা করে খুশি হয়) এবং বৃষ্টি অসময়ে করি।"
"ইয়া আল্লাহ! যখন আপনি রাজি থাকেন তখন কি করেন?"
"হুকমত বুদ্ধিমান ও নেককারদের দেই।
টাকা দনশীলদের দেই।
বৃষ্টি সময়মতো করি।
মুসা (আ.) তখন বুঝে নিও আমি রাজি হয়ে গিয়েছি।"
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দানশীল হওয়া জন্য। আল্লাহর একটি ভি.আই.পি জান্নাত রয়েছে, যার নাম জান্নাতুল ফেরদৌস।আল্লাহ পাক অন্যানো জান্নাত বানিয়েছে কুন বলে।জান্নাতুল ফেরদৌস বানিয়েছেন নিজের হাত দ্বারা।
আল্লাহ'তায়ালা বলেন, "হে জান্নাত! আমার ইজ্জত ও জালালের কসম তোমার ভিতরে কৃপণ ব্যাক্তি যেতে পারবে না।"
দানশীল যাবে, কৃপণ যেতে পারবেনা।কৃপণ ব্যাক্তির সাথে আল্লাহর বন্ধুত্ব কখনো হবে না এবং দানশীলের সাথে আল্লাহর বন্ধুত্ব কখনো ভাঙবে না।
শয়তান বলে, "ইবাদতকারী যখন কৃপণ হয় তখন আমার কোন ভয় লাগে না, সে এমনিতেই ধ্বংস হয়ে যাবে।টাকার লোভ তাকে ধ্বংস করে দিবে।নাফরমান দানশীলকে ভয় পাই, না জানি কখন তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়, তার দানশীলতার জন্য।"
জিব্রাইল (আ.) জিজ্ঞাসা করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ! ঈমান কি?"
রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন, "আল্লাহর ওপর, ফেরেশতার ওপর, কিতাবসমূহের উপর, রাসূলদের ওপর, মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের ওপর বিশ্বাস করা।"
এটি মদিনায় অবস্তানকালীন সময়ের প্রশ্ন।বিদায় হজ্বের প্রশ্ন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ! ঈমান কি?"
প্রথম প্রশ্নকারী জিব্রাইল (আ.), এখন প্রশ্নকারী হচ্ছেন আমর বিন আস (রাযি.)।
"ইয়া রাসূলুল্লাহ! ঈমান কি?"
রাসূলুল্লাহ (স.) কি উত্তর দিয়েছেন?
"ঈমান হল, ধৈর্য ধারণ করা এবং ক্ষমা করা।"
আমার ভাই-বোনেরা, আমার রবের কসম!
মানুষের দেহ থেকে পানি বের করে দিলে মানুষে মরে যাবে, ডিহাইড্রেশনের কারণে।ঠিক তেমনি, ধৈর্য দ্বীনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।ক্ষমা সেইই করবে, যে ধৈর্য ধারণ করতে পারবে।যে ধৈর্য ধারণ করতে পারে না, সে ক্ষমাও করতে পারেনা।কেয়ামতের দিন ঘোষণা করা হবে, "ধৈর্য ধারণকারী দাঁড়িয়ে যাও।"
অল্প সংখ্যক লোক দাঁড়াবে।
তাদেরকে বলা হবে, "জান্নাতে যাও।"
তাদেরকে হিসাব ছাড়া জান্নাত দান করা হবে।যখন আপনি ধৈর্য ধারণ করেন তখন একটি শক্তি তৈরি হয় ভিতরে।অন্যের খারাপ ব্যবহার আপনি সহ্য করেন।ধৈর্য সেটাকে প্রসেস করে।অতঃপর সেটাকে শক্তিতে রূপান্তর করে, ভিতর থেকে বাহিরে বের করে।পাহাড়ও পথ ছেড়ে দেয়, যখন আমরা ধৈর্যধারণ করা শিখে যাই।ক্ষমা করা শিখে যাই।২১ বছর খুন করার পরিকল্পনাকারী আহালে মক্কাবাসীদের নবীজি (স.) বললেন, "যাও ক্ষমা করে দিয়েছি।"
খন্দকের যুদ্ধে পরপর মক্কার মধ্যে দুর্ভিক্ষ নেমে আসলো। নবীজি (স.) ৩০০ দিনার অর্থাৎ প্রায় ১০-১৫ লক্ষ টাকা মক্কায় আবু সুফিয়ান কাছে পাঠালেন এবং বললেন, "মক্কায় দুর্ভিক্ষ হয়েছে, তাদেরকে খাবার খাওয়াও আমার পক্ষ থেকে।"
আবু সুফিয়ান বললো, "বাহ্ মুহাম্মদ (স.)! কোরবান হই আপনার উপর।আমরা আপনাকে খুন করার পরিকল্পনা করছি, আপনি আমাদের খাওয়াচ্ছেন!"
এটা আমার নবীর (স.) আখলাক।নবীজি (স.) ঘুমিয়ে আছেন।একজন নবীজি (স.) তরবারী উঠিয়ে উনার পাঁছলির মধ্যে মারলো।উনি উঠে বসলেন।
সে বললো, "কে বাঁচাবে?"
নবীজি (স.) বললেন, "আল্লাহ"
তার হাত কেঁপে তরবারী পড়ে গেল।নবীজি (স.) তরবারী উঠিয়ে, সোজা করলেন।অতঃপর বললেন, "তুমি বল, তোমাকে কে বাঁচাবে?”
সে বললো, "আমাকেতো আপনিই বাঁচাবেন! আরকে বাঁচাবে?"
নবীজি (স.) বললেন, "কালেমা পড়বে?"
সে বললো, "না, পড়বো না।"
এখন তো নবীজি (স.) তাকে কতল করে ফেলবেন!
খুন করার নিয়তে আসাই, তার খুন করার জন্য যথেষ্ট ছিল।
নবীজি (স.) বললেন, "যাও ক্ষমা করে দিয়েছি।"
সাহাবীদের (রাযি.) সামনে বললেন, "যাও ক্ষমা করে দিয়েছি।"
No comments