আলী (রাযি.) আল্লাহর সাথে কিভাবে কথা বলতেন? - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)


আমার ভাই-বোনেরা, অল্প সময়ে কুরআন তিলাওয়াতের জন্য আপনারা সময় বের করুন। ফাইল পড়তে পড়তে আপনাদের মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অল্প সময় কুরআন তিলাওয়াত করুন, কুরআনেরও হক রয়েছে। অল্প সময় কুরআন তিলাওয়াত করুন, অল্প সময়। প্রত্যেক ভাষায় কুরআনের তরজমা রয়েছে। অল্প সময়, অল্প সময়। আচ্ছা আপনারা বলবেন, আমি অনেক বিজি। পুরো কোরআন এর মধ্যে ৮৯ বার এসেছে "ইয়া- আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু" হে ঈমানদারগণ! এই সকল আয়াত দ্বারা আল্লাহ ঈমানদারদের সম্বোধন করেছেন। ৮৯ বার, ৯০ বারও বলেন নাই। 'ইয়া আইয়ুহান নাস' দ্বারা সমগ্র দুনিয়াবাসীকে সম্বোধন করেছেন। 'ইয়া বানি আদাম!' দ্বারা সমগ্র দুনিয়াবাসীকে সম্বোধন করেছেন। 'ইয়া-আইয়ুহাল্লাজিনা কাফারু' দ্বারা কাফেরদের সম্বোধন করেছেন। ''ইয়া আহলাল কিতাব'' দ্বারা খ্রিস্টান ও ইহুদিদের সম্বোধন করেছেন। 'ইয়া-আইয়ুহাল্লাজিনা হাদু' দ্বারা ইহুদিদের সম্বোধন করেছেন। "ইয়া- আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু" হে ঈমানদারগণ! দ্বারা আল্লাহ ঈমানদারদের সম্বোধন করেছেন। আমি কোরবান যাই, ৮৯ বার আমাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে। সেই ৮৯ আয়াতের মধ্যে ৮৯ টি হুকুম দেওয়া হয় নাই, যদি হুকুম বের করা হয় তাহলে বেশি থেকে বেশি চল্লিশটি হুকুম হবে। সুরা বাকারার এই আয়াতের মধ্যে নবীজির (স.) হক বর্ণনা করা হয়েছে, নবীজির (স.) সম্মান করতে বলা হয়েছে। ২৮ পারা। হে ঈমানদারগণ! তওবা করে তোমার রবের সাথে জুড়ে যাও। বাহ্! কুরআন কি আজীব কালাম! ওমর (রাযি.) ব্যক্তি, তরবারি নিয়ে নবীজীকে (স.) কতল করতে চলে গিয়েছিলেন। নবীজি (স.) যখন রাত্রিতে নফল নামাযে কুরআন পড়তেন, তখন ওমর (রাযি.) পর্দার পিছনে লুকিয়ে কুরআন শুনতেন (মুসলমান হওয়ার পূর্বে)। এক রাত্রিতে নবীজি (স.) সূরা হাক্কা পড়ছিলেন। সূরা হাক্কার মধ্যে খুবই শক্তিশালী ছন্দ রয়েছে। হযরত ওমর (রাযি.) শুনছেন, শুনছেন, শুনছেন। আমি আপনাদের সূরা হাক্কা তিলাওয়াত করে শুনাই তাহলে বুঝতে পারবেন এই সূরার মধ্যে কি ছন্দে রয়েছে। ওমর (রাযি.) শুনছেন! এই সুরাতো আপনাদের অন্তরে প্রভাব ফেলেছে, আমার অন্তরেও ফেলেছে। ওমরের (রাযি.) মাতৃভাষাই ছিল আরবি, তাহলে ভাবুন, তার অন্তরে কিভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল! নবীজির (স.) কুরআন তিলাওয়াত শুনতে শুনতে হঠাৎ করে অন্তরে বললেন, "আমি ইতিপূর্বে এই রকম কবি দেখি নাই।" ঠিক সেই মুহূর্তেই নবীজির আয়াত পড়লেন, "এ কোনো কবির রচনা নয়।" ওমর (রাযি.) হতভম্ব হয়ে বললেন, "উনি কত বড় জাদুকর! এত দূর থেকে আমার অন্তরের কথা শুনে নিয়েছে।" নবীজি পরবর্তীতে এই আয়াত পড়লেন, "এ কোনো জাদুকরও কথা নয়, যদিও বিষয়টি তোমাদের মন মেনে নিতে প্রস্তুত নয়।" হযরত ওমরের (রাযি.) প্রথমে এইখানে ইসলামের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল। কুরআন হল একটি মোজেজা। নাসে শব্দের অর্থ হলো দর্জি। নাসে থেকে নশিওত শব্দ এসেছে। নশিওতকে নশিওত কেন বলা হয়? কারণ হচ্ছে, ভালো কথা দ্বারা, মানুষ ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত হয়। দর্জি কি করে? সুতা দ্বারা কাপড়কে কাপড় দ্বারা জুড়ে দেয়। এইজন্য নবীদেরও নাসে বলা হয়। অর্থাৎ, তারা তাদের কথা দ্বারা বান্দাদেরকে আল্লাহর সাথে জুড়ে দেয়। "তাওবাতান নাসুহা" দ্বারা বোঝানো হয় এমন তওবা করুন যেন আল্লাহর সাথে আপনি জুড়ে জান। সেই তওবা, যেটি আমাকে আমার আল্লাহর সাথে জুড়ে দেয়। কিছুক্ষণ পূর্বে হাফেজ সাহেব এখানে কুরআন তিলাওয়াত করেছিলেন। চারবার এক হুকুম দেওয়া হয়েছে। তাকওয়া, তাকওয়া, তাকওয়া, তাকওয়া। আপনারা বলবেন, "আমিতো উঁচু শ্রেণীর কর্মকর্তা আমার কাছে সময় নেই।" কম হলেও কুরাআনের মধ্যে যে আল্লাহর ৮৯ বার "ইয়া- আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু" বলেছেন (অর্থাৎ, শুরু হয়েছে), সেই আয়াতগুলো পড়ুন। আল্লাহ কি বলছেন? হযরত আলী (রাযি.) বলেন, "যখন আমি আল্লাহর সাথে কথা বলতে চাই তখন আমি নামাজ পড়ি, আর যখন আমার ইচ্ছে করে আমার আল্লাহ আমার সাথে কথা বলুক তখন আমি কুরআন পড়ি।"

No comments

Powered by Blogger.