ইসলামে নামাজ কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ? - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)


আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার মাধ্যম হলো নামাজ।আগের উম্মতরা ২ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছিল।আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পেয়েছি।আগের উম্মতদের মসজিদ ছিল না, আমরা মসজিদ পেয়েছি।পূর্বের ওয়াক্ত আজান ছিল না, আমরা আজান পেয়েছি।আযানকে এত বড় আমল বানিয়ে দিয়েছে আমাদের নবী (স.)।আপনি (স.) বলেছেন, "যে আযান দিবে কেয়ামতের দিন সবথেকে উঁচু মাতবা পাবে।"
হযরত আলী (রাযি.) বলতেন, "যদি আমি আল্লাহর নবীর (স.) কাছে থেকে হাসান-হোসেনের (রাযি.) মসজিদে নববীর (স.) মুয়াজ্জিন বানিয়ে দিতে বলতাম।"
এটা হযরত আলী (রাযি.) বলতেন।যুদ্ধের মধ্যে যখন মুয়াজ্জিন আহত হয়ে যায়, তখন সরদাররা আযান দেওয়ার জন্য ঝগড়া শুরু করে দেয়।একজন বলে আমি দিবো, একজন বলে আমি দিব।অতঃপর প্রতিযোগিতা হয়েছে, যার নাম এসেছে সে আযান দিয়েছে।হযরত ওমর (রাযি.) বলতেন, "যদি আমি আমিরুল মুমিনিন না হোতাম, আমি মসজিদে নববীর মুয়াজ্জিন হতে পছন্দ করতাম।"
কোন উম্মত আজান পায়নি, আমরা পেয়েছি।প্রথম মুয়াজ্জিন বেল্লাল (রাযি.) হয়েছেন।দুনিয়ার মধ্যে বেল্লাল (রাযি.) কে প্রথম মুয়াজ্জিন হওয়ার সম্মননা দিয়েছেন।আখেরাতে এই অবস্থা হবে যে...
আমার নবী (স.) বলেছেন, "যখন জান্নাতে যাওয়ার সময় হবে! একটি বাহন নিয়ে আসা হবে।যখন আমি সেই বাহনে বসবো, সেই বাহনের যে দড়ি থাকবে সেটি নিচে পড়ে যাবে।"
দড়ি নিচে পড়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, এই বাহন আমার নবী (স.) ড্রাইভ করবেন না।কেউ আসবে যে কিনা এই বাহনটি চালাবেন।দড়ি নিচে পড়ে যাওয়া এটা ইন্ডিকেট করে যে, কোন ভাগ্যবান আসবে যে কিনা এই বাহনটি চালাবেন।সবাই উৎসুক চাহনিতে দেখতে থাকবে যে, কে এই বাহনটি চালাবে?
আল্লাহর পক্ষ থেকে আহ্বান করা হবে, বেল্লালকে (রাযি.) ডাকা হোক।বিল্লাল (রাযি.) বাহনটিতে উঠে দড়ি ধরবেন।আপনি (স.) বলেছেন, প্রথমে আমি জান্নাতে যাব, বেল্লাল আমার সাথে যাবে।আমার বাহণ সে নিয়ন্ত্রণ করবে।"
আমরা আজান পেয়েছি, কোন উম্মত আজান পায়নি।আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পেয়েছি, অন্য উম্মতরা দুই ওয়াক্ত নামাজ পেয়েছে।অন্য উম্মতরা ফজরে দুই রাকাত, আসরে দুই রাকাত।তারা জামাতের সাথে নামাজ পায়নি।তারা তাদের কিতাব মুখস্ত করতে পারেনি, আমরা কুরআন মুখস্ত করছি।আমার মাদ্রাসার এক ছেলে, সে এখন আমেরিকায় এক মাদ্রাসার শিক্ষক।সে ৩০ দিনে কুরআন মুখস্থ করেছে।সকালে মুখস্ত করতো সন্ধ্যায় তারাবির মধ্যে শোনাতো।আমার মাদ্রাসায় পড়েছে।সকাল থেকে মাগরিব পর্যন্ত মুখস্ত করতে, ঈশার সময় তারাবীতে শুনাতো।আল্লাহ আমাদের এমন কুরআন দিয়েছে, এক মাসের ভিতরে মুখস্ত করা সম্ভব।তিন দিনের মধ্যে একজন বয়স্ক লোক মুখস্ত করেছে।আল্লাহ আমাদের কুরআনের মত সম্পদ দান করেছেন।পড়ার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দান করেছেন।তাহাজ্জুদের নামাজ দান করেছেন।আওয়াবীনের নামাজ, ইশরাকের নামাজ, চাশতের নামাজ...
নামাজের কত শাখা খুলে দিয়েছে।আমার নবী শেষ নসিয়ত ছিল, "আমার উম্মত নামাজ ছেরোনা।"
চৌদ্দশ বছরের মধ্যে নামাজ যদি কোন ছাড়ার মত অবস্থা হয়ে থাকে!
আমার নবীর (স.) নাতির কারবালার সময়।অত্যাচারের শেষ পর্যায়ে ছিল, মজলুমও শেষ পর্যায়ের ছিল।
শেষ পর্যায়ের ছিল।
কায়ানাত এই পর্যন্ত, না এইরকম অত্যাচার দেখেছে!
না এরকম মজলুম দেখেছে!
না এরকম পাক ব্যক্তিত্ব দেখেছে!
না এরকম অত্যাচার দেখেছে!
সূর্য হিলেছে, নামাজের সময় হয়েছে।আপনি জুহায়ের কে বললেন, "সীমারকে বলো নামায পড়তে দেওয়ার জন্য।"
"নামাজ পড়বো"
উম্মতকে বার্তা দেওয়া লাগবে।নামাজ কোন অবস্থার ছাড়া বিষয় নয়।
উনি সম্মূখে গিয়ে বললেন, "নামাজ পড়তে দাও।"
সে বললো, "নামাজ পড়তে দিব না।আমরা যুদ্ধ করবো"
সে ফিরে এসে বললো, "তারারা যুদ্ধ বন্ধ করব না, যুদ্ধ করবে।"
"অর্ধেক যুদ্ধ করো, অর্ধেক নামাজ পড়ো।"
"অর্ধেক নামাজ পড়েছে, অর্ধেক যুদ্ধ করেছে।"
আসরের আগে সবাই শহীদ হয়ে গিয়েছেন।উনারা হলেন সেই ব্যক্তি যাদের সম্পর্কে আমার নবী (স.) বলেছেন, "আমার চোখের শীতলতা হাসান-হোসেন (রাযি.)।"
"জান্নাতে যুবকদের সর্দার  হাসান-হোসেন (রাযি.)।"
নামায ছাড়েননি।জান্নাতের সুসংবাদ মার দুধ খাওয়া অবস্থায় পেয়ে গিয়েছেন।কারবালার জন্য ওনারা নেতৃত্ব পান নাই।
উনার মার দুধ খাওয়া অবস্থায় জান্নাতে নেতৃত্ব পেয়েছেন।
"জান্নাতে যুবকদের সর্দার হাসান-হোসেন (রাযি.)।"
তারপরও নামায ছাড়েননি।

No comments

Powered by Blogger.