কিভাবে নিজের আখলাককে সুন্দর করবেন? - মাওলানা তারেক জামিল (বাংলা সাবটাইটেল সহ)
এ সকল বিষয়ে আমি তার সঙ্গ থেকে শিখেছি, বই পড়ে শিখি নাই।আমি অনেক বই মুখস্ত করেছিলাম।আল্লাহর কসম! আমি এই বিষয়ে বই পড়ে শিখি নাই।আমি সেই ব্যক্তির সঙ্গে থেকে শিখেছি যে, আখলাক শিখতে হয়।এটি পড়া দ্বারা অর্জন করা যায় না, এটি পড়ানো দ্বারা অর্জন করা যায় না।এটা হতে পারে যে, যে বুখারী পোড়াচ্ছে তার চরিত্র খারাপ, যে বুখারী পড়ছে তার চরিত্র খারাপ। এই গুন পড়া দ্বারা অর্জন করা যায় না, শিখা দ্বারা অর্জন করা যায়। পড়েছি, অনেক বই মুখস্ত করেছি। চটের মধ্যে বসে পড়েছি কিন্তু বুঝতে পারিনি। এক ব্যক্তিকে দেখলাম, একজন উত্তম আখলাকধারী ব্যক্তিকে দেখলাম। তার সাথে কিছু সময় অতিবাহিত করলাম, যা আমার জীবনের সব থেকে মূল্যবান সময়। অতঃপর আমি জানতে পেরেছি যে, আখলাক কাকে বলে?
আখলাকও শিখতে হয়, আরা আখলাকই মনুষ্যত্বের নাম। যদি কেউ খারাপ চরিত্রের অধিকারী হয়, তাহলে তার মধ্যে মনুষ্যত্বের কিছুই থাকেনা। আল্লাহকে খুশি করার জন্য বেশি তসবি আদায় করার প্রয়োজন নেই, আল্লাহকে খুশি করার জন্য বড় বড় ওয়াজ করার প্রয়োজন নেই। আর আল্লাহর দরবারে উচ্চ মকাম অর্জন করুন। মানুষের খারাপ ব্যবহার সহ্য করা শিখে নিন। মানুষের অপবাদ সহ্য করে নিয়ে। মানুষকে মনকে ভাঙতে দিন। মানুষকে বলতে দিন, আপনি শুনুন। আর সহ্য করতে থাকুন। আপনি সময়ের রাবেয়া বসরি (রহ.) হবেন, আপনি সময়ের জুনায়েদ বাগদাদী (রহ.) হবেন। বড় বড় ইবাদতকারী আল্লাহর কসম, আপনার সমকক্ষ হতে পারবেনা। যদি আপনি আপনার আপনার সুন্দর করে নিন, জবানকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখে নিন। মানুষের খারাপ ব্যবহারের, চুপ থাকা শিখে নিন।মানুষ কষ্ট দিলে, সহ্য করা শিখে নিন। মানুষ বেয়াদবি করলে, চুপ থাকা শিখে নিন। আর খারাপ থেকে ভালো হওয়া শিখে নিন। কেউ আপনার সাথে খারাপ করলে হাসি দেওয়া শিখে নিন।কেউ কুটুক্তি করলেও হাসি দেওয়া শিখে নিন। তাহলে তোমার জন্য বেশি নফলের দরকার হবে না, লম্বা লম্বা তাহাজ্জুদের দরকার হবে না। আপনি সেই জায়গায় যেতে পারবেন, যেখানে কেউ যেতে পারবে না। আপনার আখিরাতে সেই অবস্থান হবে যে অবস্থানে কেউ পৌঁছাতে পারবে না। আপনি সেই পজিশনে যাবেন যে পজিশনে দুনিয়া ও আখেরাতে কেউ আপনার সমকক্ষ হতে পারবে না। নিজের আখলাককে সুন্দর করুন। আখিরাতকে সুন্দর করার জন্য নিজের নফসকে পবিত্র করুন। নফস পবিত্র হয় দুই কাজ দ্বারা, এক ইবাদত দ্বারা, দুই উত্তম আখলাক দ্বারা। নফস অপবিত্র হয় দুই কাজ দ্বারা ইবাদত ছাড়া দ্বারা ও খারাপ চরিত্র অধিকারী হওয়ার কারণে। ইবাদত রুহের সবথেকে বড় খোরাক। উত্তম আখলাক সবথেকে বড় রুহের খোরাক। গুনাহকে ছেড়ে দেওয়া সব থেকে বড় আল্লাহভীতি। এগুলোর উপর আমল করবেন, আল্লাহ আপনাকে উন্নতি দান করবেন। দুনিয়াতে উন্নতি দান করবেন, আখিরাতে উন্নতি দান করবেন। আখলাক শিখতে হয়, ইবাদত শিখতে হয়। আল্লাহর রাস্তায় বের হন। নিজের আখলাককে উন্নত করুন, নিজের ঈমানকে উন্নত করুন, নিজের ব্যক্তিত্বকে উন্নত করুন। মৃত্যু পর্যন্ত এ কাজগুলো করতে থাকুন, করতে থাকুন, করতে থাকুন যদি এই অবস্থায় আপনার মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে আল্লাহ আপনার দোষ গুলো ক্ষমা করে দিবেন। আর চেষ্টা করুন, ২৪ ঘণ্টার জীবনের মধ্যে এই জবান দিয়ে ভালো কথা ছাড়া যেন কোন কথা না বের হয়। আপনি অবশ্যই ফরজ নামাজ পড়ছেন কিন্তু মাসনুন দোয়া আদায় করছেন না, নফল নামাজ পড়ছেন না, কুরআন পড়ছেন না কিন্তু আমার একটি কথা মেনে নিন নিজের জবানকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখে নিন। এখানে মাদ্রাসার ছাত্রদের দেখা যাচ্ছে। তাদেরকে কি শয়তান দাওয়াত দিবে যে, মদ্যপান কর?
শয়তান দিবে যে, জুয়া খেলো?
তাদেরকে শয়তান দাওয়াত দিবে যে, গীবত করো, অপরের খারাপ গুণ বল। তাদেরকে দাওয়াত দিবে যে, মানুষের খারাপ গুণ খুজে খুজে খুজে সেগুলো ওয়াজ করো। এভাবে তাদেরকে শয়তান ধোঁকায় ফেলে দেয়। এভাবে তাদেরকে প্রতারণা দেয় যে, তাদের নামাজের নেকি শেষ হয়ে যায়, ইবাদতের নাকি শেষ হয়ে যায়, জ্ঞান অর্জন করেন নাকি শেষ হয়ে যায়, তাবলীগ করার নাকি শেষ হয়ে যায়। আমাদের শিক্ষক মাওলানা জরসা সাহেব (রহ.) আমাদেরকে বলতেন,
গীবত সম্পর্কে আমাদের বলতেন…
“তোমরা ইলমের অর্জনকারীরা সব থেকে বেশি নেকি অর্জনকারীর দল কিন্তু এক কথা দ্বারা তোমাদের সকল নাকি শেষ করে দাও।“
আমার ভাইয়েরা, আপনারা দ্বীনদার হোন আর দুনিয়াদার হোন, মাদ্রাসার হন আর কলেজের হন, এক এবাদত শিখুন, দুই উত্তম আখলাক শিখুন। তাহলে দুনিয়া আখিরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন। যদি নফসকে পাক করতে না পারেন তাহলে আপনার দুনিয়ার জীবনও ধ্বংস, আখিরাতের জীবনও ধ্বংস। নফসকে পবিত্র করার জন্য আজকে থেকে নিয়ত করুন। নিহত করছেন?
তওবারও নিয়ত করছেন?
তহলে বলুন, "ইয়া আল্লাহ! আমার তওবা।"
No comments